একটি মেডিকেলীয় গল্প, এর সাথে বাস্তব কোন ঘটনা কিংবা চরিত্রের কোন মিল নেই. . টার্ম চলছে, আজ আরিয়ানের ফার্মা ভাইভা,দুরুদুরু বুকে সে ভাইভা বো...
একটি মেডিকেলীয় গল্প, এর সাথে বাস্তব কোন ঘটনা কিংবা চরিত্রের কোন মিল নেই. .
টার্ম চলছে, আজ আরিয়ানের ফার্মা ভাইভা,দুরুদুরু বুকে সে ভাইভা বোর্ডের সামনে যেয়ে সালাম দিল স্যার ও ম্যামকে, দুজনই চোখ তুলে যেন তাকে মেপে নিলেন, দুজনের জ্বালাময়ী দৃষ্টিতে ভেতরটা যেন জ্বলে গেল তার. .
ইশারায় তাকে বসতে বললেন ম্যাম, কিন্তু বসবার আগেই ১ম প্রশ্নটা ছুটে এল তার কাছে. .
হোয়াট আর দা এন্টিক্যানসার ড্রাগস ?
প্রশ্ন শুনে আরিয়ানের একটু অবাক হল,ভাবল এত কিছু থাকতে এন্টিক্যানসার ড্রাগস কেন আর তখনই নিজের চুল ছিড়তে ইচ্ছা হল, চোখের সামনে ড্রাগসের নামগুলো ঘোলাটে হয়ে ভাসছে, পড়বে পড়বে ভেবেও শেষমেষ আর পড়ে আসতে পারেনি, তবে বিচিত্র কারণে একটা ড্রাগ এর নাম তার মনে আছে. .
কাঁপা কাপা ঠোটে সে বলল,
-" মালফালান "
ম্যাম কটমট করে তাকিয়ে বললেন. .
- কি ??
- ম্যালফালান. .
- আর ?
এবার আকাশ বাতাস এক করে আরিয়ান ভাবতে লাগল, কিন্তু না তার মাথায় পুরো ফার্মাকোলজি চক্রাকারে ঘুরতে লাগল, কিন্তু এন্টিক্যানসার আর কোন ড্রাগ মাথায় আসছে না. .
ম্যাম এমন এক দৃষ্টিতে তাকালেন যেন জোর করে উনাকে কেউ চিরতার শরবত খাইয়ে দিছে. .
- তুমি তো ড্রাগসের নামই পার না, তোমার আর কি পরীক্ষা নেব. .
স্যার তখন মনোযোগ দিয়ে নিজের গোঁফ চাটছিলেন, হঠাত যেন সতবিত ফিরে পেলেন,, গরম চোখে ওর দিকে তাকিয়ে বললো,
" আচ্ছা বল তো ড্রাগ হ্যাবিচুয়েশন কি ? "
আরিয়ানের তখন মাথা খারাপ, এটা আবার কি কোয়েশ্চেন, এই জনমেও তো এরকম কোন টার্ম সে শুনে নাই, সে মাথা নিচু করে রইল. .
স্যার আর দেরি করলেন না. .
- এগুলো তো বেসিক জিনিস,এইটার মত সহজ পড়া আর কিছু আছে নাকি,আমি দশ বছর ধরে ফার্মা পড়াইতেছি কিন্তু তোর মত স্টুডেন্ট তো কখনো দেখি নাই, তোর তো বেটা ডাক্তারি পড়ার যোগ্যতা নাই, ডাক্তার হয়ে কি ডিমের ব্যবসা করবি, রুগী আসলে ডিম খাওয়াই দিবি. .
ম্যাম তাতে হো হো করে হেসে উঠলেন, যেন স্যার বিরাট রসিকতা করে ফেলছেন, ম্যামের হাসি দেখে স্যার আরেকবার চিরিত করে নিজের গোঁফটা চেটে নিয়ে দ্বিগুণ উত্সাহে আরিয়ানকে সাইজ করতে লাগলেন. .
এরপর ঝাড়া দশ মিনিট ম্যাম আর স্যার মিলে তাকে এফোঁড় ওফোঁড় করে দিলেন. .
হঠাত আরিয়ানের যেন কি হল, আর সইতে পারল না সে,,বলল. .
- স্যার বেয়াদবি নিবেন না, দশ বছর ফার্মা পড়ানোর পর আপনার কাছে যেটা সহজ, পানির মত, সেইটা আমার কাছে সহজ নাও হতে পারে. .
আমারো আছে পাঁচ বছর টিউশনি করানোর অভিজ্ঞতা, এবার আমি প্রশ্ন করছি আপনি উত্তর দিবেন, বলুন তো দেখি. .
" একটা চৌবাচ্চা ৫মিনিটে একটি নল দ্বারা পূর্ণ হয়,আরেকটি নল দ্বারা ১০ মিনিটে খালি হয়, দুটি নল একসাথে খুলে দিলে চৌবাচ্চাটি কতক্ষণে পূর্ণ হবে ? "
ম্যাম বিস্ফোরিত চোখে আর স্যার ভ্যাবলার মত তাকিয়ে রইলেন. .
- কি পারবেন না ? আচ্ছা এটা বলুন একটি নৌকা স্রোতের অনুকুলে ৫ ঘন্টা যেয়ে স্রোতের প্রতিকুলে ৩ ঘন্টা যায় সর্বমোট ৫ কিমি যায়, নৌকার বেগ কত ছিল ?
স্যারের তখন চোয়াল ঝুলে পড়ল, দুপাটি দাঁতের মাঝখানে জিহ্বাখানা কামড় খাইবার যোগাড়. .
- কি স্যার এটাও পারবেন না ? আচ্ছা সহজ দেখে একটা প্রশ্ন করি, শতকরা ৪ টাকা হার সুদে কত টাকার ২ বছরের মুনাফা ও চক্রবৃদ্ধি মুনাফার পার্থক্য ১ টাকা হবে ?
পঞ্চাশোর্ধ অভিজ্ঞ স্যারের তখন কাঁদো কাঁদো দশা, হতবিহ্বল স্যারের ঠোঁটের কোণা দিয়ে একটুখানি লালা ঝরে পরছিল. .
তা দেখে আরিয়ান হো হো করে অট্রহাসিতে ফেটে পড়ল আর বলল,
" স্যার আপনার তো মেট্রিক পাশেরই যোগ্যতা নাই, আপনি কোন সাহসে আমার পরীক্ষা নিতে বসছেন ?!?! আপনাদের সময় কি নুরুল ইসলামের মত কোন গুণী লোক শিক্ষামন্ত্রী ছিল নাকি ?! "
হাসতে হাসতেই চোখটা খুলে গেল আরিয়ানের, ঘুটঘুটে অন্ধকার রুম, তাড়াতাড়ি লাইট জেলে দেখে রাত তিনটা বেজে গেছে, আধা ঘন্টা ঘুমাবে ভেবে টানা দুই ঘন্টা ঘুমিয়ে ফেলছে, সকালে ফার্মা ভাইভা কিভাবে দিবে তাই ভাবছে... তাড়াতাড়ি পড়তে বসল সে, নিজেকে এই বলে সান্তনা দিল যে, স্বপ্ন আর বাস্তবতা কখনো এক হয় না, তাও তো স্বপ্ন আমাদেরকে এই ভয়াবহ বাস্তবতা থেকে কিছুটা হলেও দুরে সরিয়ে রাখে, সেটাই বা কম কি. . .
..... Stranger Farhan
ফেসবুক লিংক - http://fb.com/DrREAL
টার্ম চলছে, আজ আরিয়ানের ফার্মা ভাইভা,দুরুদুরু বুকে সে ভাইভা বোর্ডের সামনে যেয়ে সালাম দিল স্যার ও ম্যামকে, দুজনই চোখ তুলে যেন তাকে মেপে নিলেন, দুজনের জ্বালাময়ী দৃষ্টিতে ভেতরটা যেন জ্বলে গেল তার. .
ইশারায় তাকে বসতে বললেন ম্যাম, কিন্তু বসবার আগেই ১ম প্রশ্নটা ছুটে এল তার কাছে. .
হোয়াট আর দা এন্টিক্যানসার ড্রাগস ?
প্রশ্ন শুনে আরিয়ানের একটু অবাক হল,ভাবল এত কিছু থাকতে এন্টিক্যানসার ড্রাগস কেন আর তখনই নিজের চুল ছিড়তে ইচ্ছা হল, চোখের সামনে ড্রাগসের নামগুলো ঘোলাটে হয়ে ভাসছে, পড়বে পড়বে ভেবেও শেষমেষ আর পড়ে আসতে পারেনি, তবে বিচিত্র কারণে একটা ড্রাগ এর নাম তার মনে আছে. .
কাঁপা কাপা ঠোটে সে বলল,
-" মালফালান "
ম্যাম কটমট করে তাকিয়ে বললেন. .
- কি ??
- ম্যালফালান. .
- আর ?
এবার আকাশ বাতাস এক করে আরিয়ান ভাবতে লাগল, কিন্তু না তার মাথায় পুরো ফার্মাকোলজি চক্রাকারে ঘুরতে লাগল, কিন্তু এন্টিক্যানসার আর কোন ড্রাগ মাথায় আসছে না. .
ম্যাম এমন এক দৃষ্টিতে তাকালেন যেন জোর করে উনাকে কেউ চিরতার শরবত খাইয়ে দিছে. .
- তুমি তো ড্রাগসের নামই পার না, তোমার আর কি পরীক্ষা নেব. .
স্যার তখন মনোযোগ দিয়ে নিজের গোঁফ চাটছিলেন, হঠাত যেন সতবিত ফিরে পেলেন,, গরম চোখে ওর দিকে তাকিয়ে বললো,
" আচ্ছা বল তো ড্রাগ হ্যাবিচুয়েশন কি ? "
আরিয়ানের তখন মাথা খারাপ, এটা আবার কি কোয়েশ্চেন, এই জনমেও তো এরকম কোন টার্ম সে শুনে নাই, সে মাথা নিচু করে রইল. .
স্যার আর দেরি করলেন না. .
- এগুলো তো বেসিক জিনিস,এইটার মত সহজ পড়া আর কিছু আছে নাকি,আমি দশ বছর ধরে ফার্মা পড়াইতেছি কিন্তু তোর মত স্টুডেন্ট তো কখনো দেখি নাই, তোর তো বেটা ডাক্তারি পড়ার যোগ্যতা নাই, ডাক্তার হয়ে কি ডিমের ব্যবসা করবি, রুগী আসলে ডিম খাওয়াই দিবি. .
ম্যাম তাতে হো হো করে হেসে উঠলেন, যেন স্যার বিরাট রসিকতা করে ফেলছেন, ম্যামের হাসি দেখে স্যার আরেকবার চিরিত করে নিজের গোঁফটা চেটে নিয়ে দ্বিগুণ উত্সাহে আরিয়ানকে সাইজ করতে লাগলেন. .
এরপর ঝাড়া দশ মিনিট ম্যাম আর স্যার মিলে তাকে এফোঁড় ওফোঁড় করে দিলেন. .
হঠাত আরিয়ানের যেন কি হল, আর সইতে পারল না সে,,বলল. .
- স্যার বেয়াদবি নিবেন না, দশ বছর ফার্মা পড়ানোর পর আপনার কাছে যেটা সহজ, পানির মত, সেইটা আমার কাছে সহজ নাও হতে পারে. .
আমারো আছে পাঁচ বছর টিউশনি করানোর অভিজ্ঞতা, এবার আমি প্রশ্ন করছি আপনি উত্তর দিবেন, বলুন তো দেখি. .
" একটা চৌবাচ্চা ৫মিনিটে একটি নল দ্বারা পূর্ণ হয়,আরেকটি নল দ্বারা ১০ মিনিটে খালি হয়, দুটি নল একসাথে খুলে দিলে চৌবাচ্চাটি কতক্ষণে পূর্ণ হবে ? "
ম্যাম বিস্ফোরিত চোখে আর স্যার ভ্যাবলার মত তাকিয়ে রইলেন. .
- কি পারবেন না ? আচ্ছা এটা বলুন একটি নৌকা স্রোতের অনুকুলে ৫ ঘন্টা যেয়ে স্রোতের প্রতিকুলে ৩ ঘন্টা যায় সর্বমোট ৫ কিমি যায়, নৌকার বেগ কত ছিল ?
স্যারের তখন চোয়াল ঝুলে পড়ল, দুপাটি দাঁতের মাঝখানে জিহ্বাখানা কামড় খাইবার যোগাড়. .
- কি স্যার এটাও পারবেন না ? আচ্ছা সহজ দেখে একটা প্রশ্ন করি, শতকরা ৪ টাকা হার সুদে কত টাকার ২ বছরের মুনাফা ও চক্রবৃদ্ধি মুনাফার পার্থক্য ১ টাকা হবে ?
পঞ্চাশোর্ধ অভিজ্ঞ স্যারের তখন কাঁদো কাঁদো দশা, হতবিহ্বল স্যারের ঠোঁটের কোণা দিয়ে একটুখানি লালা ঝরে পরছিল. .
তা দেখে আরিয়ান হো হো করে অট্রহাসিতে ফেটে পড়ল আর বলল,
" স্যার আপনার তো মেট্রিক পাশেরই যোগ্যতা নাই, আপনি কোন সাহসে আমার পরীক্ষা নিতে বসছেন ?!?! আপনাদের সময় কি নুরুল ইসলামের মত কোন গুণী লোক শিক্ষামন্ত্রী ছিল নাকি ?! "
হাসতে হাসতেই চোখটা খুলে গেল আরিয়ানের, ঘুটঘুটে অন্ধকার রুম, তাড়াতাড়ি লাইট জেলে দেখে রাত তিনটা বেজে গেছে, আধা ঘন্টা ঘুমাবে ভেবে টানা দুই ঘন্টা ঘুমিয়ে ফেলছে, সকালে ফার্মা ভাইভা কিভাবে দিবে তাই ভাবছে... তাড়াতাড়ি পড়তে বসল সে, নিজেকে এই বলে সান্তনা দিল যে, স্বপ্ন আর বাস্তবতা কখনো এক হয় না, তাও তো স্বপ্ন আমাদেরকে এই ভয়াবহ বাস্তবতা থেকে কিছুটা হলেও দুরে সরিয়ে রাখে, সেটাই বা কম কি. . .
..... Stranger Farhan
এ সাইটে লিখতে যোগাযোগ করুন -
-ডাঃ স্বাধীনফেসবুক লিংক - http://fb.com/DrREAL