একজন কসাই তৈরির গল্প যা পত্রিকার পাতায় আসে না : >- Medical Life - মেডিকেল লাইফ = অসংখ্য আইটেম, কার্ড , টার্ম আর প্রফ পাস করিয়া, এক বছর...
একজন কসাই তৈরির গল্প যা পত্রিকার পাতায় আসে না : >- Medical Life - মেডিকেল লাইফ=
অসংখ্য আইটেম, কার্ড , টার্ম আর প্রফ পাস করিয়া, এক বছরের ইন্টার্নি সমাপ্ত করিয়া অবশেষে কুদ্দুস মা বাবার বেকার সন্তান হইল মানে এম্বিবিএস পাস করিল। মোট সময় লাগিল ছয় বছর। তখন তাহার বয়স ২৫ বছর।
অতঃপর নিজের মেডিকেলে অনারারি মানে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দান শুরু হইল।
আর পাশাপাশি বিসিএস এর প্রস্তুতি।
বিসিএস এ চান্স ও পাইয়া গেল
, বিসিএসের নিয়োগ দিতে দিতে প্রায় দুই বছর।
দু বছর পর কুদ্দুস ব্যাগ ও ব্যাগেজ সমেত প্রামে রওনা হইল।
সেই খানে দুই বছর থাকিতে হবে। থাকিলে পরে নাকি গাড়ি,বাড়ি সহ বিপুল বিত্ত বৈভবের মালিক হওয়া যাইবে।
অতঃপর শুরু হইল কুদ্দুসের গ্রামের জীবন যাপন।
যেখানে প্যারাসিটামল দিয়ে মাথা ব্যাথা থেকে শুরু করে ক্যান্সার পর্যন্ত সব রোগের চিকিৎসা করীতে হয়।
ভয়ংকর আবাসস্থল, এলাকার রাজনৈতিক নেতাদের আরও ভয়ংকর ব্যাবহার সব সহ্য করিয়া কুদ্দুস দিন যাপন করে।
কারন স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন, এর পর অটোমেটিক ভাল হাসপাতালে পোস্টিং হইবেক।
এর মাঝে স্বাস্থ্যমন্ত্রী আবার ভোল পাল্টাইলেন।
দুই না গ্রামে নাকি তিন বছর থাকা লাগিবে।
শেষ পর্যন্ত কুদ্দুস তিন বছর থাকিল।
কুদ্দুসের বয়স তখন ত্রিশ।
কিন্তু পোস্টিং তো আর হয় না।
ডিজি হেলথের অফিসে গেলে তারা কুদ্দুসকে দারোয়ান বলিয়াও গন্য করে না। কি মহা বিপদ!!!
অবশেষে নানা ঝামেলা শেষ করিয়া কুদ্দুসের পোস্টিং হল আর ও এক বছর পর।
কুদ্দুস এখন সার্জন হবার চেষ্টা করছে। নিউরো সার্জন।
কুদ্দুসের বয়স এখন ৩২ চলে।
কুদ্দুস সার্জন হবার প্রানপ্রণ চেষ্টায় লিপ্ত হয়। সার্জন হওয়া তো চাট্রিখানি কথা নয়।
তাহার ইচ্ছা একেবারে পাস করা।
বড় ভাইরা বলিলেন, তুমি কি চন্দ্রদেশ থেকে আসিয়াছ নাকি!!!!!!!!
কোর্সের পাঁচ বছর মেয়াদ শেষ হয়।
কিন্তু পাস তো আর হয় না।
কুদ্দুস কে ঢাকার বাইরে পাঠীয়ে দেওয়া হয়।
কুদ্দুসের বয়স তখন ৩৭ চলছে।
ঢাকার বাইরে যেখানে পোস্টিং সেখানে নরমাল সার্জারি ভালভাবে হয় না।
আর নিউরো সার্জারি তো দূর কি বাত!!!!! অতএব সার্জন কুদ্দুস যা যা শিখেছলেন সবই ভুলে যেতে থাকেন।
কুদ্দুস ভাল ছাত্র ছিলেন। দুই বছরের মাথায় পাস করলেন।
তখন তার বয়স ৩৯ চলছে।
কিন্তু আবার পোস্টিং এর ঝামেলা, প্রমোশনের ঝামেলা।
আর ও তিন বছর পর ডাক্তার কুদ্দুস জুনিয়র কনসালটেন্ট হলেন এবং এমন একটি জায়গায় পোস্টিং পেলেন যেখানে নিউরোসার্জারি হয়।
তখন তার বয়স ৪২ বছর চলছে।
এত দিনে সার্জারি থেকে অনেক দূরে ছিলেন।
আবার শেখা শুরু করলেন।
শেখার গতি ধীর।
নিউরোসার্জারি খুবই সেনসিটিভ। সামান্য গন্ডগোলে অনেক কিছু হতে পারে।
যাক এভাবে পাঁচ বছর কাজ করার পর কুদ্দুস সাহেব মোটামুটি নিজ হাতে করার মত ভাল ভাবে নিউরো সার্জারি শিখলেন।
এখন তিনি নিজে একা সার্জারি করা শুরু করলেন।
তখন তার বয়স ৪৭ বছর।
তার প্রমোশন হয়েছে।
তিনি পরের পাঁচ বছর ভাল ভাবে সার্ভিস দিতে পারলেন।
তিনি এখন সিনিয়র একজন ডাক্তার।
এখন তাহার বয়স ৫২।
ডায়বেটীস ধরা পড়েছে।
লো ব্যাক পেইন ও শুরু হয়েছে।
একটানা বেশিক্ষন দাড়িয়ে থাকতে পারেন না।
সার্জেরি করার সময় হাত কাঁপে। পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথি।
তাহার বয়স ৫৭।
তিনি এখন সার্জারি করেন না।
জুনিয়র ডাক্তাররা করেন। তিনি শুধু দাড়িয়ে দেখেন।
এই দেশ ভাল ডাক্তার চায়। ভাল সার্জন চায়।
একজন সার্জন হবেন তরুন,মধ্যবয়সী,সাহসী।
আর আমরা বৃদ্ধ,বয়সের ভারে আক্রান্ত সার্জন তৈরি করি।
অতপর বিদেশে যাই চিকিৎসা করতে।
আর যারা গরীব, যাদের চিকিৎসা , যাদের সার্জারি কুদ্দুস সাহেবদেরই করতে হবে, তাদের জীবন বিপন্ন করে যাই।
এই সব কোনদিন সংবাদপত্রের নিউজ হয় না। কারন পাব্লিক ডিমান্ড নাই।
ডাক্তারের অবহেলায় রোগীর মৃত্যুই স্বাস্থ্য খাতের সবচেয়ে ডীমান্ডেবল সংবাদ!!!!!!!!!!
--- লিখেছেন - তানভীর আহমেদ ---
ফেসবুক লিংক - http://fb.com/DrREAL
অসংখ্য আইটেম, কার্ড , টার্ম আর প্রফ পাস করিয়া, এক বছরের ইন্টার্নি সমাপ্ত করিয়া অবশেষে কুদ্দুস মা বাবার বেকার সন্তান হইল মানে এম্বিবিএস পাস করিল। মোট সময় লাগিল ছয় বছর। তখন তাহার বয়স ২৫ বছর।
অতঃপর নিজের মেডিকেলে অনারারি মানে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দান শুরু হইল।
আর পাশাপাশি বিসিএস এর প্রস্তুতি।
বিসিএস এ চান্স ও পাইয়া গেল
, বিসিএসের নিয়োগ দিতে দিতে প্রায় দুই বছর।
দু বছর পর কুদ্দুস ব্যাগ ও ব্যাগেজ সমেত প্রামে রওনা হইল।
সেই খানে দুই বছর থাকিতে হবে। থাকিলে পরে নাকি গাড়ি,বাড়ি সহ বিপুল বিত্ত বৈভবের মালিক হওয়া যাইবে।
অতঃপর শুরু হইল কুদ্দুসের গ্রামের জীবন যাপন।
যেখানে প্যারাসিটামল দিয়ে মাথা ব্যাথা থেকে শুরু করে ক্যান্সার পর্যন্ত সব রোগের চিকিৎসা করীতে হয়।
ভয়ংকর আবাসস্থল, এলাকার রাজনৈতিক নেতাদের আরও ভয়ংকর ব্যাবহার সব সহ্য করিয়া কুদ্দুস দিন যাপন করে।
কারন স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন, এর পর অটোমেটিক ভাল হাসপাতালে পোস্টিং হইবেক।
এর মাঝে স্বাস্থ্যমন্ত্রী আবার ভোল পাল্টাইলেন।
দুই না গ্রামে নাকি তিন বছর থাকা লাগিবে।
শেষ পর্যন্ত কুদ্দুস তিন বছর থাকিল।
কুদ্দুসের বয়স তখন ত্রিশ।
কিন্তু পোস্টিং তো আর হয় না।
ডিজি হেলথের অফিসে গেলে তারা কুদ্দুসকে দারোয়ান বলিয়াও গন্য করে না। কি মহা বিপদ!!!
অবশেষে নানা ঝামেলা শেষ করিয়া কুদ্দুসের পোস্টিং হল আর ও এক বছর পর।
কুদ্দুস এখন সার্জন হবার চেষ্টা করছে। নিউরো সার্জন।
কুদ্দুসের বয়স এখন ৩২ চলে।
কুদ্দুস সার্জন হবার প্রানপ্রণ চেষ্টায় লিপ্ত হয়। সার্জন হওয়া তো চাট্রিখানি কথা নয়।
তাহার ইচ্ছা একেবারে পাস করা।
বড় ভাইরা বলিলেন, তুমি কি চন্দ্রদেশ থেকে আসিয়াছ নাকি!!!!!!!!
কোর্সের পাঁচ বছর মেয়াদ শেষ হয়।
কিন্তু পাস তো আর হয় না।
কুদ্দুস কে ঢাকার বাইরে পাঠীয়ে দেওয়া হয়।
কুদ্দুসের বয়স তখন ৩৭ চলছে।
ঢাকার বাইরে যেখানে পোস্টিং সেখানে নরমাল সার্জারি ভালভাবে হয় না।
আর নিউরো সার্জারি তো দূর কি বাত!!!!! অতএব সার্জন কুদ্দুস যা যা শিখেছলেন সবই ভুলে যেতে থাকেন।
কুদ্দুস ভাল ছাত্র ছিলেন। দুই বছরের মাথায় পাস করলেন।
তখন তার বয়স ৩৯ চলছে।
কিন্তু আবার পোস্টিং এর ঝামেলা, প্রমোশনের ঝামেলা।
আর ও তিন বছর পর ডাক্তার কুদ্দুস জুনিয়র কনসালটেন্ট হলেন এবং এমন একটি জায়গায় পোস্টিং পেলেন যেখানে নিউরোসার্জারি হয়।
তখন তার বয়স ৪২ বছর চলছে।
এত দিনে সার্জারি থেকে অনেক দূরে ছিলেন।
আবার শেখা শুরু করলেন।
শেখার গতি ধীর।
নিউরোসার্জারি খুবই সেনসিটিভ। সামান্য গন্ডগোলে অনেক কিছু হতে পারে।
যাক এভাবে পাঁচ বছর কাজ করার পর কুদ্দুস সাহেব মোটামুটি নিজ হাতে করার মত ভাল ভাবে নিউরো সার্জারি শিখলেন।
এখন তিনি নিজে একা সার্জারি করা শুরু করলেন।
তখন তার বয়স ৪৭ বছর।
তার প্রমোশন হয়েছে।
তিনি পরের পাঁচ বছর ভাল ভাবে সার্ভিস দিতে পারলেন।
তিনি এখন সিনিয়র একজন ডাক্তার।
এখন তাহার বয়স ৫২।
ডায়বেটীস ধরা পড়েছে।
লো ব্যাক পেইন ও শুরু হয়েছে।
একটানা বেশিক্ষন দাড়িয়ে থাকতে পারেন না।
সার্জেরি করার সময় হাত কাঁপে। পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথি।
তাহার বয়স ৫৭।
তিনি এখন সার্জারি করেন না।
জুনিয়র ডাক্তাররা করেন। তিনি শুধু দাড়িয়ে দেখেন।
এই দেশ ভাল ডাক্তার চায়। ভাল সার্জন চায়।
একজন সার্জন হবেন তরুন,মধ্যবয়সী,সাহসী।
আর আমরা বৃদ্ধ,বয়সের ভারে আক্রান্ত সার্জন তৈরি করি।
অতপর বিদেশে যাই চিকিৎসা করতে।
আর যারা গরীব, যাদের চিকিৎসা , যাদের সার্জারি কুদ্দুস সাহেবদেরই করতে হবে, তাদের জীবন বিপন্ন করে যাই।
এই সব কোনদিন সংবাদপত্রের নিউজ হয় না। কারন পাব্লিক ডিমান্ড নাই।
ডাক্তারের অবহেলায় রোগীর মৃত্যুই স্বাস্থ্য খাতের সবচেয়ে ডীমান্ডেবল সংবাদ!!!!!!!!!!
--- লিখেছেন - তানভীর আহমেদ ---
এ সাইটে লিখতে যোগাযোগ করুন -
-ডাঃ স্বাধীনফেসবুক লিংক - http://fb.com/DrREAL