শীতের এই সময়টাতে শ্রদ্ধেয় মহসীন স্যারের একটি ঘটনাটা বার বার চোখের সামনে ভেসে উঠে। স্যান্ডেল পরে কলেজে যাওয়াটা স্যার অসম্ভব অপছন্দ করতেন...
শীতের এই সময়টাতে শ্রদ্ধেয় মহসীন স্যারের একটি ঘটনাটা বার বার চোখের সামনে ভেসে উঠে।
স্যান্ডেল পরে কলেজে যাওয়াটা স্যার অসম্ভব অপছন্দ করতেন।বিশেষ করে যারা শীতকালে স্যান্ডেল পরে কলেজে যেত তাদের ওযু করানোর পর শপথ বাক্য পাঠ করিয়ে তবেই স্যার ছাড়তেন।শুধু তাই নয় ঠিকমত ওযু করল কিনা এটা আবার স্যারকে ভেজা হাত পা দেখিয়ে তবেই রেহাই পাওয়া যেত।নতুবা কনকনে হাড়কাপানো শীতে যেখানে পকেট থেকে হাত বের করাই দুস্কর সেখানে দুবার ওযু করা।সে এক ভয়াবহ শাস্তি আর পানি তো না যেন লোকাল এনেস্থাসিয়া।এই ওযুর করার ভয়ে পোলাপান দলে দলে স্যান্ডেল ছেড়ে জুতা পড়তে শুরু করল।
অসম্ভব বড় মনের মানুষ,একজন আর্দশ শিক্ষক।স্যারকে প্রত্যেকটা স্টুডেন্ট শ্রদ্ধা করে মন থেকে ভীতি থেকে নয়।
-আরো কিছু স্মৃতি মনের জানালায় বার বার উঁকি দেয়
আমাদের ব্যাচে একজন বিখ্যাত স্যার ছিলেন যিনি স্টুডেন্ট মহলে ছিলেন এক ত্রাসের আতংক।কোপানো বিদ্যায় তার বিশেষ পারদর্শীতার জন্য তিনি সুধীমহলে ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছেন।সার্জনরা সচরাচর একটু বদমেজাজি রগচটা ধরনের হয়।তিনি একটু বেশী রাগী ছিলেন।আমাদের ব্যাচের জৈনিক আঁতেল কমলা সুন্দরীকে তিনি এই বলে শাসাচ্ছেন,'' এই মেয়ে তুমি পড়ালেখা কর?''স্যারের কথা শুনে আমি রীতিমত স্তব্ধ বাকরুদ্ধ।যে মেয়ে মাঝে মাঝে বইয়ের ভিতর থেকে মাথা বের করে।পড়ার বইগুলোকে গল্পের বই মনে করে পড়ে তারেই এমন ঝাড়ি আর আমার মত ফাঁকিবাজরে কি করবেন আল্লাহ জানেন।এরপর যথারীতি আমার যাবার পালা। ভিসেরার তীব্র ফরমালিনে ঝাঁঝে আমার দুই নয়ন দিয়ে অঝোর ধারায় অশ্রু ঝরছে।প্রথমে স্যারের প্রিয় ভিসেরা মেল জেনেটেলিয়া ধরতে বললেন বরাবরের মতই এ ভিসেরা প্রতি আমার অতি মাত্রায় অনাগ্রহ ছিল।এরপর একের পর এক প্রশ্নের তীর ছুড়ছেন।বেশ কয়েকটা তীর লক্ষ্যভ্রস্ট হল।স্যার ধীরে ধীরে আরো ডিপে যাচ্ছেন। এদিকে আমার রসদ সরবরাহ প্রায় শেষ।আমি মনে মনে বলি হে ধরিত্রী দ্ধিধা হও।দীর্ঘ ২০মিনিট সেই ভিসেরা হাতে নিয়ে স্যারের টক ঝাল মিষ্টি মিশ্রিত ঝাড়ি খাওয়ার স্বাদ কখনোই ভুলা যাবে না।স্যার অবশ্য একটা উপকার করেছেন ঐ দিনের ডাইনিং এর খাবারের বিলটা বাঁচিয়ে দিয়েছেলেন:-P:-P:-P
শিল্পী ম্যাম আমাদের এনাটমীর ব্যাচ টিচার ছিলেন।ম্যাম যেমন যত্ন করে পড়ান এবং তেমনি স্টুডেন্টদের কাছ থেকে পড়াটা আদায় করে নিতে পারেন।সদ্য ক্লাস শুরু হয়েছে এরই মাঝে আইটেম নামক যন্ত্রণা দায়ক বস্তুর আর্বিভাব।আর প্রথমদিকে এনাটমি পড়তে ভালো লাগত না।অতি অল্প দিনের মধ্যে ম্যাম আবিস্কার করলেন আমি ফাঁকিবাজ এরপর থেকে আমার উপর তুষারের মত প্রশ্ন করতে থাকতেন।বেশ কিছু দিন দুই ঘন্টা আবার কোন কোন দিন তিন ঘন্টা সটানে দাঁড়িয়ে থাকার কঠিন ট্রেনিং দিতে লাগলেন।পরে অবস্থা বেগতিক দেখে এরপর থেকে বাধ্য হয়ে নিয়মিত পড়াশুনা করতে শুরু করলাম।থোরাক্স কার্ডে যথারীতি ম্যামের কাছে ভাইভা আমরা দুইপা বুড়ো মানুষের দন্তের ন্যায় থরথর করে কাঁপছে শীতকালে মাত্রারিক্ত ঘামছি।আমার উপর ম্যামের ইমপ্রেশন ছিল দুর্বল স্টুডেন্ট কিন্তু সে দিন আমাকে কোন প্রশ্ন করে ম্যাম আটকাতে পারে নি।ম্যাম আমার ঘুরে দাঁড়ানো দেখে সেদিন প্রচন্ড অবাক হয়েছিলেন।ম্যামের ঝাড়িতে সেই ভাইটামিন আছে আর এই ভাইটামিনই ছিল আমার ঘুরে দাঁড়ানোর অনুপ্রেরণা।
প্রথম দিকে ওয়ার্ডে টানা দুঘন্টা টানা দাঁড়িয়ে থেকে ক্লাস করতে অনেকেই পারত না।তখন আমি মনে মনে হাসি এই ভেবে যে ম্যাম আমাকে দাঁড়িয়ে থাকার ট্রেনিং ২বছর আগেই দিয়েছেন যেটা তোরা মিস করেছিস:-P
প্রত্যেক শিক্ষক তাদের স্ব স্ব অবস্থানে সেরা।
পৃথিবীর সবচেয়ে কঠিন শাস্ত্রকে যারা সহজ করার অবিরাম চেষ্টা করে একজন আদর্শ ডাক্তার একজন আদর্শ মানুষ গড়ার গুরু দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন নিষ্ঠার সাথে সেই সকল নিবেদিত প্রাণ শিক্ষকদের প্রতি রইল বিনম্র শ্রদ্ধা।তারা বেঁচে থাকবেন তাদের আর্দশ থাকবে সকল স্টুডেন্টদের হৃদয়ের মণিকোঠায়।
আবিদুর রহমান নিশাত
স্যান্ডেল পরে কলেজে যাওয়াটা স্যার অসম্ভব অপছন্দ করতেন।বিশেষ করে যারা শীতকালে স্যান্ডেল পরে কলেজে যেত তাদের ওযু করানোর পর শপথ বাক্য পাঠ করিয়ে তবেই স্যার ছাড়তেন।শুধু তাই নয় ঠিকমত ওযু করল কিনা এটা আবার স্যারকে ভেজা হাত পা দেখিয়ে তবেই রেহাই পাওয়া যেত।নতুবা কনকনে হাড়কাপানো শীতে যেখানে পকেট থেকে হাত বের করাই দুস্কর সেখানে দুবার ওযু করা।সে এক ভয়াবহ শাস্তি আর পানি তো না যেন লোকাল এনেস্থাসিয়া।এই ওযুর করার ভয়ে পোলাপান দলে দলে স্যান্ডেল ছেড়ে জুতা পড়তে শুরু করল।
অসম্ভব বড় মনের মানুষ,একজন আর্দশ শিক্ষক।স্যারকে প্রত্যেকটা স্টুডেন্ট শ্রদ্ধা করে মন থেকে ভীতি থেকে নয়।
-আরো কিছু স্মৃতি মনের জানালায় বার বার উঁকি দেয়
আমাদের ব্যাচে একজন বিখ্যাত স্যার ছিলেন যিনি স্টুডেন্ট মহলে ছিলেন এক ত্রাসের আতংক।কোপানো বিদ্যায় তার বিশেষ পারদর্শীতার জন্য তিনি সুধীমহলে ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছেন।সার্জনরা সচরাচর একটু বদমেজাজি রগচটা ধরনের হয়।তিনি একটু বেশী রাগী ছিলেন।আমাদের ব্যাচের জৈনিক আঁতেল কমলা সুন্দরীকে তিনি এই বলে শাসাচ্ছেন,'' এই মেয়ে তুমি পড়ালেখা কর?''স্যারের কথা শুনে আমি রীতিমত স্তব্ধ বাকরুদ্ধ।যে মেয়ে মাঝে মাঝে বইয়ের ভিতর থেকে মাথা বের করে।পড়ার বইগুলোকে গল্পের বই মনে করে পড়ে তারেই এমন ঝাড়ি আর আমার মত ফাঁকিবাজরে কি করবেন আল্লাহ জানেন।এরপর যথারীতি আমার যাবার পালা। ভিসেরার তীব্র ফরমালিনে ঝাঁঝে আমার দুই নয়ন দিয়ে অঝোর ধারায় অশ্রু ঝরছে।প্রথমে স্যারের প্রিয় ভিসেরা মেল জেনেটেলিয়া ধরতে বললেন বরাবরের মতই এ ভিসেরা প্রতি আমার অতি মাত্রায় অনাগ্রহ ছিল।এরপর একের পর এক প্রশ্নের তীর ছুড়ছেন।বেশ কয়েকটা তীর লক্ষ্যভ্রস্ট হল।স্যার ধীরে ধীরে আরো ডিপে যাচ্ছেন। এদিকে আমার রসদ সরবরাহ প্রায় শেষ।আমি মনে মনে বলি হে ধরিত্রী দ্ধিধা হও।দীর্ঘ ২০মিনিট সেই ভিসেরা হাতে নিয়ে স্যারের টক ঝাল মিষ্টি মিশ্রিত ঝাড়ি খাওয়ার স্বাদ কখনোই ভুলা যাবে না।স্যার অবশ্য একটা উপকার করেছেন ঐ দিনের ডাইনিং এর খাবারের বিলটা বাঁচিয়ে দিয়েছেলেন:-P:-P:-P
শিল্পী ম্যাম আমাদের এনাটমীর ব্যাচ টিচার ছিলেন।ম্যাম যেমন যত্ন করে পড়ান এবং তেমনি স্টুডেন্টদের কাছ থেকে পড়াটা আদায় করে নিতে পারেন।সদ্য ক্লাস শুরু হয়েছে এরই মাঝে আইটেম নামক যন্ত্রণা দায়ক বস্তুর আর্বিভাব।আর প্রথমদিকে এনাটমি পড়তে ভালো লাগত না।অতি অল্প দিনের মধ্যে ম্যাম আবিস্কার করলেন আমি ফাঁকিবাজ এরপর থেকে আমার উপর তুষারের মত প্রশ্ন করতে থাকতেন।বেশ কিছু দিন দুই ঘন্টা আবার কোন কোন দিন তিন ঘন্টা সটানে দাঁড়িয়ে থাকার কঠিন ট্রেনিং দিতে লাগলেন।পরে অবস্থা বেগতিক দেখে এরপর থেকে বাধ্য হয়ে নিয়মিত পড়াশুনা করতে শুরু করলাম।থোরাক্স কার্ডে যথারীতি ম্যামের কাছে ভাইভা আমরা দুইপা বুড়ো মানুষের দন্তের ন্যায় থরথর করে কাঁপছে শীতকালে মাত্রারিক্ত ঘামছি।আমার উপর ম্যামের ইমপ্রেশন ছিল দুর্বল স্টুডেন্ট কিন্তু সে দিন আমাকে কোন প্রশ্ন করে ম্যাম আটকাতে পারে নি।ম্যাম আমার ঘুরে দাঁড়ানো দেখে সেদিন প্রচন্ড অবাক হয়েছিলেন।ম্যামের ঝাড়িতে সেই ভাইটামিন আছে আর এই ভাইটামিনই ছিল আমার ঘুরে দাঁড়ানোর অনুপ্রেরণা।
প্রথম দিকে ওয়ার্ডে টানা দুঘন্টা টানা দাঁড়িয়ে থেকে ক্লাস করতে অনেকেই পারত না।তখন আমি মনে মনে হাসি এই ভেবে যে ম্যাম আমাকে দাঁড়িয়ে থাকার ট্রেনিং ২বছর আগেই দিয়েছেন যেটা তোরা মিস করেছিস:-P
প্রত্যেক শিক্ষক তাদের স্ব স্ব অবস্থানে সেরা।
পৃথিবীর সবচেয়ে কঠিন শাস্ত্রকে যারা সহজ করার অবিরাম চেষ্টা করে একজন আদর্শ ডাক্তার একজন আদর্শ মানুষ গড়ার গুরু দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন নিষ্ঠার সাথে সেই সকল নিবেদিত প্রাণ শিক্ষকদের প্রতি রইল বিনম্র শ্রদ্ধা।তারা বেঁচে থাকবেন তাদের আর্দশ থাকবে সকল স্টুডেন্টদের হৃদয়ের মণিকোঠায়।
আবিদুর রহমান নিশাত