মেডিকেল লাইফের সালতামামি একজন স্টুডেন্টকে ডাক্তার হতে হলে এম.বি.বি.এস নামক কঠিন কোর্সের সম্মুখীন হতে হয়।এই ৫টি বছরে একজন মে...
মেডিকেল লাইফের সালতামামি
একজন স্টুডেন্টকে ডাক্তার হতে হলে এম.বি.বি.এস নামক কঠিন কোর্সের সম্মুখীন হতে হয়।এই ৫টি বছরে একজন মেডিকেল স্টুডেন্টর ভাবনাঃ ¤ 1st year (struggling year): মেডিকেল কলেজে ভর্তি হবার পর
<< ফেসবুকে আপডেট জানতে মেডিকেল লাইফফ্যান পেজ এ গেট নোটিফিকেশনে ক্লিক দিয়ে রাখুন >>
মেডিকেল লাইফ ফ্যান পেজ দেখতে নীচের ছবিতে ক্লিক করুন
একজন স্টুডেন্ট যখন ডাক্তার হওয়ার স্বপ্নে বিভোর,সেই স্বপ্নে দুঃস্বপ্নের মত হানা দেয় আইটেম নামক সম্পূর্ণ ভিন্নধর্মী এক পরীক্ষা।নতুন পরিবেশের সাথে খাপ খাওয়ানোর চেষ্টার সাথে সাথে বাড়তি পড়াশুনার চাপ সহ্য করার জন্য ১ম বর্ষের স্টুডেন্টদের অনেক সংগ্রাম করতে হয়।কঠিন প্রস্তুতি আর বাবা-মায়ের আর্শীবাদ নিয়ে হাজির হয় জীবনের প্রথম আইটেম দেওয়ার জন্য।পরীক্ষায় পাসের খবর বাবা-মাকে জানাতে ব্যাকুল হয়ে পরা,খাবার টেবিলে-কলেজ থেকে ফেরার পথে,মসজিদ থেকে বের হবার সময় আলোচনার বিষয়বস্তু থাকে এই আইটেম।জীবনে প্রথম ফেল করার তিক্ত অভিজ্ঞতা অনেকের এখান থেকেই শুরু হয়।কেউ আবার ফেল করে,পড়াশুনার চাপ সহ্য করতে না পেরে হতাশার সাগরে হাবুডুবু খেতে শুরু করে।এই হতাশা কে আশায় রুপান্তরিত করতে সাহায্য করে শ্রদ্ধেয় শিক্ষকমণ্ডলী,প্রাণপ্রিয় বন্ধু বান্ধব,বড় ভাই-বোন,বাবা-মা।একসময় সে এই কঠিন পড়াশুনার সাথে খাপ খেয়ে নেয়।তখন এই কঠিন পড়াশুনাটা তার কাছে অনেক সহজ হয়ে যায়। ¤ 2nd year (tension year): ২য় বর্ষে পদার্পণের সাথে সাথে ১ম পেশাগত পরীক্ষার ভীতি ভালোভাবে পরিলক্ষিত হয়।জীবনের ১ম পেশাগত পরীক্ষা অংশগ্রহণ করার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করে তোলার সাথে সাথে পরীক্ষায় ভালো করার একটা বাড়তি প্রয়াস থাকে এসময়। 3rd year (relax year): ১ম পেশাগত পরীক্ষা দেওয়ার পর অনেকটা নির্ভার,ভীতিহীন থাকা যায় ৩য় বর্ষে।১ম,২য় বর্ষের মত এতটা পরীক্ষা থাকে না ৩য় বর্ষে।যেই আইটেম পড়তে আগে অনেকক্ষন লাগতো তার চেয়ে বড় আইটেম অনেক কম সময়ের ভিতর পড়ার অভ্যাস হয়ে যায়।কিন্তু মজার বিষয় হচ্ছে,নানান কাজের ভীড়ে পড়ার জন্য সেই সময়টুকু আর হয়ে উঠে না।ওয়ার্ডে ক্লাস করতে যাওয়ার পর রুগীর সাথে আলাপচারিতা,তার রোগের বিষয় বিস্তারিত জানার পর তাকে ভালো হওয়ার আশ্বাস দেওয়া ,শিক্ষকগন যখন কোন রোগ সম্পর্কে পড়ান তারপর যখন রোগীটাকে দেখান,পরীক্ষা করেন।তার লক্ষণ রোগের সাথে মিলে যায় তখন পড়াশুনাটা অনেক প্রাণবন্ত হয়ে উঠে করতেও অনেক ভালো লাগে। স্টেথো গলায় ঝুলিয়ে ওয়ার্ডে যাওয়া,রোগী দেখার পর নিজেকে ২য় বারের মত ডাক্তার মনে হতে থাকে। (১ম বার মেডিকেলে চান্স পাওয়ার পর) ¤ 4th year (pressure year): ৪র্থ বছরে উঠার সাথে সাথে আবার পড়াশুনার চাপ অনেক বেড়ে যায়।যারা নিয়মিত পড়াশুনা করে তাদের খুব একটা কষ্ট হয় না কিন্তু অনেকেই ৩য় বর্ষে পড়াশুনা কম করে যার ফলে তাদের উপর মারাত্মক প্রেসারের সম্মুখীন হয়।তবে সব প্রতিকূলতাকে নিজের অনুকূলে এনে ২য় পেশাগত পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য প্রস্তুত হয়। ¤ 5th year (dying year): ১ম,২য় পেশাগত পরীক্ষায় খারাপ করলে সেটা রিকভারি করার জন্য ইয়ার লস হয় না।কিন্তু ৩য় পেশাগত পরীক্ষায় খারাপ করলেই পিছিয়ে যেতে হবে ছয়টি মাস।তাই প্রাণপণে চেস্ষ্টা করে পাশ করাটাই প্রধান আর একমাত্র লক্ষ্য হয়ে দাড়ায়।তবে যারা ঠিকমতো পাশ করতে পারে না তাদের ভেঙ্গে পড়ার বা হতাশ হওয়ার কিছু নেই।কারণ একজন মেডিকেল স্টুডেন্টকে সারাজীবন ধরেই পড়তে হয়।যে কোন সময় যে কেউ খারাপ করতেই পারে।হয়তো বা তার জীবনের সবচেয়ে বড় কষ্টটাই একদিন তার জীবনের সবচেয়ে বড় শক্তি হয়ে দাঁড়াবে। এভাবে সুখ-দুখ,হাসি কান্না,আনন্দ-বেদনার মধ্য দিয়ে কেটে যায় ৫ টি বছর।
আবিদুর রহমান নিশাত,মমেক