'মুরগী ধরা' কিম্বা 'মাছধরা'- র উৎসব মেডিকেলে প্রথম বর্ষের ক্লাস শুরু হয়ে যাবে কদিন বাদেই । অধিকাংশ কলেজেই হয়ত ওরিয়...
'মুরগী ধরা' কিম্বা 'মাছধরা'- র উৎসব মেডিকেলে প্রথম বর্ষের ক্লাস শুরু হয়ে যাবে কদিন বাদেই ।
অধিকাংশ কলেজেই হয়ত ওরিয়েন্টেশন ক্লাস শেষ হয়েছে/হবে।এরপর পুরোদমে শুরু হয়ে যাবে ক্লাস।পড়া শোনার চাপ বেড়ে হবে প্রচন্ড, দম ফেলার ফুরসতটুকুও খুঁজে পাওয়া যাবে না ।তো ঠিক এই সময়েরই কোন একদিন হয়ত ইমিডিয়েট সিনিয়রদের হাতে র্যাগ খেতে হবে নবীনদের।এই র্যাগ জুনিয়রদের জন্য এক মূর্তিমান আতঙ্কের নাম হলেও সিনিয়র দের জন্য সেটা আনন্দদায়ক মুরগী ধরা কিম্বা মাছ ধরার উৎসব মাত্র।
প্রথমেই বলে রাখি ভয় পাইয়ে দেবার জন্য এই পোস্ট নয়। আর ছোটদের জন্য সুখের কথা হলো অন্য জায়গার তুলনায় মেডিকেলে যে র্যাগিং করা হয় তা র্যাগিংয়ের পর্যায়েই পড়েই না ।এই সিনিয়রদের হালকা পাতলা বকুনি টাইপ র্যাগিং । তবে তার মানে এই না আমি এই সিস্টেমের পক্ষে কথা বলছি । বিকৃত পন্থায় আনন্দ লাভের এই উৎসব খুব দ্রুত বন্ধ হওয়া উচিত।খুব দ্রুত ।কিন্তু এই কাজটা কেউ করবে না।র্যাগ দেয় মূলত ইমিডিয়েট সিনিয়র ব্যাচ।দেখা যাবে একজন এর বিপক্ষে বললে ব্যাচের আর দশজন এর পক্ষে যুক্তি দিবে- "গতবার তো আমরা খেয়েছি। এবার কেন দিব না ?" বিষয়টা এমন এক চেইন রিএকশনের মতো হয়ে গেছে যে শক্ত হস্তক্ষেপ ছাড়া এটা বন্ধ হবে না ।কিন্তু প্রিভেনশন বলে একটা কথা আছে ।এই পোস্টের উদ্দেশ্য হলো এই প্রিভেনশনের দিকটা নিয়ে কিছু কথা বলা । র্যাগিংয়ের ক্ষেত্রে কিছু রিস্ক ফ্যাক্টর আছে ।দেখা গেছে এই ফ্যাক্টরগুলো যাদের মধ্য বেশি দেখা যায় ,তাদেরই কিন্তু বেশি হেনস্হা করা হয় । তাই ফার্স্ট ইয়ারের ছোট ভাইবোনদের নিচের কিছু বিষয়ে সতর্ক হলে বিপদ অনেকখানি এড়ানো সম্ভবঃ
১-সালাম প্রদান না করাঃ এটা অনেক বড়ো একটা ফ্যাক্টর । তোমাদের বড় ভাইয়া আপুরা সিনিয়রদেরকে ইচ্ছা কিম্বা অনিচ্ছায় এতোদিন ধরে সালাম দেওয়ার পর তারা যখন সিনিয়র হয়ে যায় ,তখন স্বাভাবিকভাবেই তারা এই সম্মানটুকু আশা করে । তাই তারা যখন এটা পায় না ,তখন তারা ধরেই নেয় ছেলেটি বা মেয়েটি বেয়াদব । তাই বড়ভাইয়া আপুদের অসম্মান করা যাবে না।দেখা হলে সালাম দিতে হবে।কিন্তু তুমি তো চেন না কে সিনিয়র আর কে ব্যাচমেট ? তাই দেখা হলে সবাইকে সালাম দেওয়ার এই প্রাকটিসটা করা উচিত ।তাছাড়া এটা তো নবীজী সাঃ এর সুন্নাত ।
২-কোনভাবেই কারো সাথে বেয়াদবি করা যাবে না ।কমন প্লেসগুলোতে (যেমন ডাইনিং হলে বা কমনরুমে , বাথরুমে) থাকাকালিন কাউকে ব্যাচমেট মনে করে তুমি সম্বোধন করা উচিত নয় ।কারণ তুমি প্রথম গিয়েই তোমার সব ব্যাচমেটদের চেনো না ।তাই আপনি সম্বোধন করাই নিরাপদ ।
৩-তুমি উমুক কলেজ থেকে এসেছো ,তুমি এটা জানো ,সেটা জানো , তমুক তোমার ক্যালিবার-এই টাইপের বাগাড়ম্বর করা যাবে না একদমই । করলে কিন্তু ধরা খাবে নিশ্চিত ।
৪-মেডিকেলে সবসময় কারো না কারো পরীক্ষা থাকেই ।তাই তোমার পড়াশোনা শেষ ভেবে উচ্চস্বরে গান গাইবা কিম্বা নিজের বাড়ি মনে করে সাউন্ড বক্সে হাইভলিউমে লুঙ্গিড্যান্স শুনবা তো তোমার লুঙ্গি আর লুঙ্গীর জায়গায় থাকবে না ।
৫-কমনপ্লেসগুলোতে তোমার পাশে বসা বড়ভাইকে দিয়ে ফুট ফরমায়েশ খাটাতে যাবা না । হয়ত ঐমুহুর্ত্বে তোমার দিকে ডালের বাটিটা ঠিকই এগিয়ে দিবেন ।কিন্তু পরে দেখবা এর শোধ ঠিকই তুলে নিবেন । তাই সাধু সাবধান ।
৬-বড়ভাইয়া আপুর সামনে গার্লফ্রেন্ড/বয়ফ্রেন্ডের সাথে মোবাইল ফোনে খবরদার প্রেম করতে যাবা না ।নাহলে কিন্তু পরে সবার সামনে লুতুপুতু আলাপ করতে হতে পারে ।
৭-এনাটমিতে টার্মিনালজি মানে মেডিকেলের কিছু পরিভাষা পড়তে হয় ।যেমন ফ্রন্ট মানে সামনে ।সেটা মেডিকেলের পরিভাষায় হয় এন্টেরিওর । পিছে হলে পোস্টেরিওর ।পাশে হলে ল্যাটেরাল ইত্যাদি । মিথ্যে ভাব নেওয়ার জন্য ফটফট করে তোমার বন্ধুকে হয়ত বলছো , ঐ এন্টেরিওরলি দেখ কিম্বা ল্যাটেরালি ঘোর-এই কাজগুলো করতে যেয়ো না । কারণ তোমার ভাইয়া আপুরা এই চেপ্টার বহুবছর আগে শেষ করেছে ।সুতরাং ভাব নিয়েছো তো খবর আছে ।
সবচেয়ে বড়ো কথা হলো তোমার আচরণ যেন হয় মার্জিত ।তুমি যদি নম্র ভদ্র হও তবে তোমার সাথে কেউ খারাপ ব্যবহার করবে না ।আর যদি না হয় তবে র্যাগের দিন একটু বকুনি খেতে হতে পারে। আর কিছু না। আগেই ভয় পাইয়ে দিলাম কিনা বুঝতে পারছি না । তবে কলেজ গিয়ে হঠাৎ এমন এক অবস্হার সাথে পরিচিত হওয়ার চেয়ে আগে থেকেই নিজেকে প্রস্তুত হওয়াটাই মনে হয় বেশি বুদ্ধিমানের কাজ । সবার জন্য শুভকামনা
শুভকামনায় - আল আমিন মহাম্মদ
<< ফেসবুকে আপডেট জানতে মেডিকেল লাইফ
ফ্যান পেজ এ গেট নোটিফিকেশনে ক্লিক দিয়ে রাখুন >>
মেডিকেল লাইফ ফ্যান পেজ দেখতে নীচের ছবিতে ক্লিক করুন
অধিকাংশ কলেজেই হয়ত ওরিয়েন্টেশন ক্লাস শেষ হয়েছে/হবে।এরপর পুরোদমে শুরু হয়ে যাবে ক্লাস।পড়া শোনার চাপ বেড়ে হবে প্রচন্ড, দম ফেলার ফুরসতটুকুও খুঁজে পাওয়া যাবে না ।তো ঠিক এই সময়েরই কোন একদিন হয়ত ইমিডিয়েট সিনিয়রদের হাতে র্যাগ খেতে হবে নবীনদের।এই র্যাগ জুনিয়রদের জন্য এক মূর্তিমান আতঙ্কের নাম হলেও সিনিয়র দের জন্য সেটা আনন্দদায়ক মুরগী ধরা কিম্বা মাছ ধরার উৎসব মাত্র।
প্রথমেই বলে রাখি ভয় পাইয়ে দেবার জন্য এই পোস্ট নয়। আর ছোটদের জন্য সুখের কথা হলো অন্য জায়গার তুলনায় মেডিকেলে যে র্যাগিং করা হয় তা র্যাগিংয়ের পর্যায়েই পড়েই না ।এই সিনিয়রদের হালকা পাতলা বকুনি টাইপ র্যাগিং । তবে তার মানে এই না আমি এই সিস্টেমের পক্ষে কথা বলছি । বিকৃত পন্থায় আনন্দ লাভের এই উৎসব খুব দ্রুত বন্ধ হওয়া উচিত।খুব দ্রুত ।কিন্তু এই কাজটা কেউ করবে না।র্যাগ দেয় মূলত ইমিডিয়েট সিনিয়র ব্যাচ।দেখা যাবে একজন এর বিপক্ষে বললে ব্যাচের আর দশজন এর পক্ষে যুক্তি দিবে- "গতবার তো আমরা খেয়েছি। এবার কেন দিব না ?" বিষয়টা এমন এক চেইন রিএকশনের মতো হয়ে গেছে যে শক্ত হস্তক্ষেপ ছাড়া এটা বন্ধ হবে না ।কিন্তু প্রিভেনশন বলে একটা কথা আছে ।এই পোস্টের উদ্দেশ্য হলো এই প্রিভেনশনের দিকটা নিয়ে কিছু কথা বলা । র্যাগিংয়ের ক্ষেত্রে কিছু রিস্ক ফ্যাক্টর আছে ।দেখা গেছে এই ফ্যাক্টরগুলো যাদের মধ্য বেশি দেখা যায় ,তাদেরই কিন্তু বেশি হেনস্হা করা হয় । তাই ফার্স্ট ইয়ারের ছোট ভাইবোনদের নিচের কিছু বিষয়ে সতর্ক হলে বিপদ অনেকখানি এড়ানো সম্ভবঃ
১-সালাম প্রদান না করাঃ এটা অনেক বড়ো একটা ফ্যাক্টর । তোমাদের বড় ভাইয়া আপুরা সিনিয়রদেরকে ইচ্ছা কিম্বা অনিচ্ছায় এতোদিন ধরে সালাম দেওয়ার পর তারা যখন সিনিয়র হয়ে যায় ,তখন স্বাভাবিকভাবেই তারা এই সম্মানটুকু আশা করে । তাই তারা যখন এটা পায় না ,তখন তারা ধরেই নেয় ছেলেটি বা মেয়েটি বেয়াদব । তাই বড়ভাইয়া আপুদের অসম্মান করা যাবে না।দেখা হলে সালাম দিতে হবে।কিন্তু তুমি তো চেন না কে সিনিয়র আর কে ব্যাচমেট ? তাই দেখা হলে সবাইকে সালাম দেওয়ার এই প্রাকটিসটা করা উচিত ।তাছাড়া এটা তো নবীজী সাঃ এর সুন্নাত ।
২-কোনভাবেই কারো সাথে বেয়াদবি করা যাবে না ।কমন প্লেসগুলোতে (যেমন ডাইনিং হলে বা কমনরুমে , বাথরুমে) থাকাকালিন কাউকে ব্যাচমেট মনে করে তুমি সম্বোধন করা উচিত নয় ।কারণ তুমি প্রথম গিয়েই তোমার সব ব্যাচমেটদের চেনো না ।তাই আপনি সম্বোধন করাই নিরাপদ ।
৩-তুমি উমুক কলেজ থেকে এসেছো ,তুমি এটা জানো ,সেটা জানো , তমুক তোমার ক্যালিবার-এই টাইপের বাগাড়ম্বর করা যাবে না একদমই । করলে কিন্তু ধরা খাবে নিশ্চিত ।
৪-মেডিকেলে সবসময় কারো না কারো পরীক্ষা থাকেই ।তাই তোমার পড়াশোনা শেষ ভেবে উচ্চস্বরে গান গাইবা কিম্বা নিজের বাড়ি মনে করে সাউন্ড বক্সে হাইভলিউমে লুঙ্গিড্যান্স শুনবা তো তোমার লুঙ্গি আর লুঙ্গীর জায়গায় থাকবে না ।
৫-কমনপ্লেসগুলোতে তোমার পাশে বসা বড়ভাইকে দিয়ে ফুট ফরমায়েশ খাটাতে যাবা না । হয়ত ঐমুহুর্ত্বে তোমার দিকে ডালের বাটিটা ঠিকই এগিয়ে দিবেন ।কিন্তু পরে দেখবা এর শোধ ঠিকই তুলে নিবেন । তাই সাধু সাবধান ।
৬-বড়ভাইয়া আপুর সামনে গার্লফ্রেন্ড/বয়ফ্রেন্ডের সাথে মোবাইল ফোনে খবরদার প্রেম করতে যাবা না ।নাহলে কিন্তু পরে সবার সামনে লুতুপুতু আলাপ করতে হতে পারে ।
৭-এনাটমিতে টার্মিনালজি মানে মেডিকেলের কিছু পরিভাষা পড়তে হয় ।যেমন ফ্রন্ট মানে সামনে ।সেটা মেডিকেলের পরিভাষায় হয় এন্টেরিওর । পিছে হলে পোস্টেরিওর ।পাশে হলে ল্যাটেরাল ইত্যাদি । মিথ্যে ভাব নেওয়ার জন্য ফটফট করে তোমার বন্ধুকে হয়ত বলছো , ঐ এন্টেরিওরলি দেখ কিম্বা ল্যাটেরালি ঘোর-এই কাজগুলো করতে যেয়ো না । কারণ তোমার ভাইয়া আপুরা এই চেপ্টার বহুবছর আগে শেষ করেছে ।সুতরাং ভাব নিয়েছো তো খবর আছে ।
সবচেয়ে বড়ো কথা হলো তোমার আচরণ যেন হয় মার্জিত ।তুমি যদি নম্র ভদ্র হও তবে তোমার সাথে কেউ খারাপ ব্যবহার করবে না ।আর যদি না হয় তবে র্যাগের দিন একটু বকুনি খেতে হতে পারে। আর কিছু না। আগেই ভয় পাইয়ে দিলাম কিনা বুঝতে পারছি না । তবে কলেজ গিয়ে হঠাৎ এমন এক অবস্হার সাথে পরিচিত হওয়ার চেয়ে আগে থেকেই নিজেকে প্রস্তুত হওয়াটাই মনে হয় বেশি বুদ্ধিমানের কাজ । সবার জন্য শুভকামনা
শুভকামনায় - আল আমিন মহাম্মদ
<< ফেসবুকে আপডেট জানতে মেডিকেল লাইফ
ফ্যান পেজ এ গেট নোটিফিকেশনে ক্লিক দিয়ে রাখুন >>
মেডিকেল লাইফ ফ্যান পেজ দেখতে নীচের ছবিতে ক্লিক করুন